Perspective (পরিপ্রেক্ষিত)
আমরা ছবি অঙ্কন করি দ্বিমাএিক পরিতলে। চিএপটের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে। যখন দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বেধ আছে এমন বস্তুর ছবি আঁকা হয় তখন কঠিন সমস্যা দেখা দেয়। বহুকাল আগে থেকেই দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে এমন বস্তুর ছবি অঙ্কন করা হতো। পরবর্তীকালে বেধ-এর প্রয়োগে ছবিতে যথাযথ প্রান ফিরে পায়। শিল্পীর চোখে সূক্ষ্ম অনুভূতি তা সম্ভব হলো। এভাবেই, ঘনবস্তকে যেভাবে চোখে পড়ে সেভাবে ছবি আঁকার বিদ্যাকে বলা হয় পরিপ্রেক্ষিত।
পরিপ্রেক্ষিতে সূত্র গুলি প্রথম আবিস্কার করেন ইউরোপের ফিলিপ্পো ব্রুনোলেচি (Filippo Brunelleschi)।পরবর্তীকালে পাউলো উচ্চিলে এবং পিয়ারো দেল্লা ফ্রানসেসকো পরিপ্রেক্ষিত বিদ্যার প্রভূত উন্নতি সাধন করেন। কিন্তু পরিপ্রেক্ষিত যে শুধুমাত্র ইউরোপীয়দের উদ্ভাবন ও তাঁরাই প্রয়োগকর্তা তা ঠিক নয়। ভারতীয় প্রাচীন ষড়ঙ্গ শাস্ত্র 'প্রমার' মধ্যে পরিপ্রেক্ষিতের কৌশল নিহিত আছে তা বলা বাহুল্য। অজন্তা গুহার চিত্র অঙ্কন তারই প্রকৃত উদাহরণ। তারই পূর্ণজ্ঞান নিয়ে রেখার মধ্যে পরিপ্রেক্ষিতের সুস্পষ্ট রীতি প্রয়োগ করেছেন। পরিপ্রেক্ষিত বিদ্যার সঠিক রূপায়ণ পরবর্তীকালের শিল্পীরা,... তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন লিওনার্দো-দা-ভিঞ্চি,মাইকেল এঞ্জেলো, রাফায়েল প্রমুখ শিল্পীগণ।
পরিপ্রেক্ষিত বিদ্যা ব্যতীত ছবি আঁকা অনেকক্ষেত্রে অসম্ভব। চিত্রকরের মনে রাখতে হয় একই আয়তনের দূরের জিনিসটি ছোট ও কাছে জিনিসটি বড় দেখা যায়। এর ব্যাতিক্রম হলে শিল্পসত্বা বিঘ্নিত হবে। দেখার সময় দূরের জিনিসটি কাছে ও কাছের জিনিসটি দূরে দেখা বিচিত্র নয়। এই রসকলাই পরিপ্রেক্ষিত। রেললাইন সর্বদা সমান্তরাল সরলরেখায় চলে। কখনও পরস্পর মিলিত হয় না কিন্তু পরিপ্রেক্ষিত বিদ্যার লক্ষ্য করা যায় উক্ত সমান্তরাল সরলরেখা দুটি যতই দূরে চলে যাচ্ছে ততই কাছে এগিয়ে আসে এবং একসময়ে একই বিন্দুতে মিলিত হচ্ছে। এই বিন্দুটিকে বলে বিলীয়মান, বিলয়প্রাপ্ত বিন্দু বা Vanishing Point.
পরিপ্রেক্ষিতে সূত্রাবলী এখন আলোচনা করছি। পরিপ্রেক্ষিতকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা হয়।
যথা,