প্রাণচঞ্চলহীন বস্তুর ছবি আঁকাকেই বলে স্থির চিত্র বা অচেতন পদার্থের চিত্র। স্থির চিত্র অঙ্কনে জড় বস্তুর আকৃতি, অবস্থান পুঙ্খানুপুঙ্খ লক্ষ্য রেখে শিল্পী শৈলীতে রূপায়িত করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে এভাবে শিল্পীরা অঙ্কন পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। ধর্মীয়, গাঁথা, চালচিত্র ইত্যাদিকে সুন্দরভাবে তাঁরা ফুটিয়ে তুলেছেন।
স্থিরচিত্র শব্দটি আবিষ্কার হয় ডাচ দেশে। বস্তুর সকল যেমন পাত্র, ফুল, ফল ইত্যাদি সুন্দরভাবে সাজানো ও তার প্রকৃত রূপ দেওয়ার মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পায়। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে বস্তুগুলির গড়ন ও গতি একতফা না হয়ে পড়ে। ভ্যান গগের অদ্বিতীয় স্থিরচিত্র হল সূর্যমুখী ফুল ও একজোড়া বুট জুতো। তাছাড়া পল সেজনের স্থিরচিত্রের বিশিষ্টতা ফুটে উঠেছে কাপড়, দেয়াল, কমলালেবু, আপেল ইত্যাদি অঙ্গনে। পরবর্তীকালে শিল্পী কিউবিস্ট জর্জেস ব্রাক ও পাবলো পিকাসো অসংখ্য শিল্পকর্মে স্থিরচিত্রের সার্থক রূপায়ন পরিলক্ষিত হয়।
শিল্পীকে স্থির চিত্র অংকন আয়ত্ত করতে প্রয়োজন আলোছায়ার মাত্রা, ছন্দ, ভঙ্গিমা, রুপের গঠন, পর্দা ইত্যাদির উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান। শিল্পকলার উত্তরোত্তর উন্নতি হওয়ায় পরবর্তীকালে ইম্প্রেশনিজম ও কিউবিজমের শিল্পীগণ বহু স্থির চিত্র অঙ্কন করেছেন। তাঁরা রূপ ও গঠনের প্রকৃতিকে আলো বর্ণের সুষম ব্যবহারে ছবি গুলিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বিভিন্ন জ্যামিতিক গঠন ভঙ্গিও ফুটে উঠেছে স্থির চিত্র অঙ্কনে। স্থির চিত্র অঙ্কনের শিল্পীকে বস্তুর বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করতে হবে - তাহলেই সার্থক ছবি সম্ভব হবে। সেই অনুভূতি শিল্পীকে অবশ্যই অর্জন করতে হবে।।
ঊদাহরন -👇